দুর্ঘটনায় পুরোপুরি নষ্ট হয়ে যাওয়া রেলের যে লোকোমোটিভ ইঞ্জিন তিন কোটি খরচে মেরামত করে লাইনে দেওয়া হয়েছিল তিন মাস না যেতেই সেটি একেবারে বিকল হয়ে গেছে। মেরামতের সময় ৪টি ট্রাকশন মোটরের পরিবর্তে দুটি লাগানোর কারণেই ইঞ্জিনটি বিকল হয়ে গেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। আর এমন কাজ করতে গিয়ে সেই তিন কোটি টাকার নয়ছয় হয়েছে কি-না তা নিয়েও কানাঘুষা রয়েছে।
২০১৩ সালের ৭ অক্টোবর ঢাকা-সিলেট রুটে আন্তঃনগর পারাবত ট্রেনটিকে ২৯৩৩ নং ইঞ্জিনটি টেনে নিয়ে যাচ্ছিল। হবিগঞ্জের মাধবপুর নোয়াপাড়া স্টেশনে ওই ট্রেনটি লাইনচ্যুত হয়ে দুর্ঘটনায় পড়লে ইঞ্জিনটির নিচের অংশের জ্বালানি ট্যাংকে আগুন লেগে সম্পূর্ণ বিকল (ড্যামেজ) হয়ে পড়ে।
পুড়ে যাওয়া ইঞ্জিনটি চট্টগ্রামের পাহাড়তলী ডিজেল শপে পাঠানোর পর সেখানে পুরোপুরি মেরামত সম্ভব না হওয়ায় ২০১৯ সালের ১৫ মে মেরামতের জন্য বাংলাদেশ রেলওয়ের ইঞ্জিন মেরামত করার কেন্দ্রীয় লোকমোটিভ কারখানায় (কেলোকা) পাঠানো হয়।
চলতি বছরের মার্চ মাসে প্রথমবারের মতো পুরোপুরি নষ্ট হয়ে যাওয়া রেলের সেই লোকোমোটিভ ইঞ্জিন ৩ কোটি টাকা খরচ করে পুরোপুরি সচল করে বেশ প্রশংসা কুড়িয়েছিল রেল বিভাগ। এরপর রেলের বহরে যুক্ত করা হয় ২৯৩৩ নম্বর ইঞ্জিনটি। কিন্তু গত তিন মাসে বার বার বিকল হয়ে পড়া ইঞ্জিনটি এখন পড়ে আছে।
অভিযোগ উঠেছে, পুড়ে যাওয়া ইঞ্জিনটিতে মেরামতের সময় নতুন ৪টি ট্রাকশন মোটর দেওয়ার কথা বলা হলেও মূলত দুটি ট্রাকশন মোটর লাগানো হয়েছে। ফলে দ্বিতীয়বার মেরামত করা হলেও ১১ দিন পর নষ্ট হয়ে ১৮ জুলাই ইঞ্জিনটি পার্বতীপুর লোকশেডে বিকল হয়ে পড়ে।
কেলোকার মেরামত কাজের শিডিউল ইনচার্জ গোলাম মোস্তাফা বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, বিকল হয়ে পড়ায় ২১ জুলাই ইঞ্জিনটিকে কেলোকাতে পাঠানো হয়েছে। এবারও ট্রাকশন মোটরের সমস্যা হয়েছে। বর্তমানে ইঞ্জিনটি বিকল হয়ে পার্বতীপুর কেন্দ্রীয় লোকোমোটিভ কারখানায় পড়ে আছে।
এদিকে কি কারণে এমন পরিস্থিতি তৈরি হলো তা জানতে রেলের দায়িত্বশীল উর্ধতন কর্মকর্তারা কাজ শুরু করেছেন। প্রকৃত অর্থে কয়টি ট্রাকশন মোটর লাগানো হয়েছে, কোথা থেকে, সেসব কত টাকায় কেনা হয়েছে এসব জানতে তদন্ত কমিটি হচ্ছে বলেও গুঞ্জনও আছে।