সংকটে ক্ষুদ্র ঋণ কার্যক্রম, প্রায় বন্ধ রয়েছে কিস্তি আদায়। ফলে নতুন ঋণ বিতরণের ক্ষেত্রেও প্রতিবন্ধকতা তৈরি হয়েছে।
গ্রামীণ অর্থনীতিতে যে পরিমান বিনিয়োগ হয়, তার ৭৩ শতাংশ অর্থের যোগান দেয় বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা বা এনজিও খাত। অর্থাৎ গ্রামীণ অর্থনীতির ৩ কোটি ৩০ লাখ পরিবারের অর্থায়ন নিশ্চিত করেছে ক্ষুদ্র ঋণ কার্যক্রম। কিন্তু করোনাভাইরাস সংক্রমণে থমকে গেছে স্বাভাবিক কর্মকাণ্ড। প্রায় বন্ধ হতে চলেছে ঋণ বিতরণ ও কিস্তির টাকা আদায়। বছরে ১ লাখ ৫৫ হাজার কোটি টাকার ঋণ বিতরণ করে এনজিও খাত। তবে করোনা ভাইরাসের কারণে তিন মাসে ঋণ বিতরণ কমেছে স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে ৪০ হাজার কোটি টাকা।
ঋণ বিতরণ কমার ফলে তা সরাসরি গ্রামীণ অর্থনীতিতে বিরুপ প্রভাব ফেলেছে। কৃষি এবং ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা সৃষ্টিতে অর্থায়ন নিশ্চিত করে এনজিও প্রতিষ্ঠানগুলো। হিসাব বলছে, গেলো মার্চ থেকে মে এই তিন মাসে এনজিও খাতে ঋণ স্থিতি কমেছে ২২ হাজার ৩৯৫ কোটি টাকা। সঞ্চয় ঘাটতি হয়েছে ২ হাজার কোটি টাকা।
এমন পরিস্থিতিতে মাঠ পর্যায়ে ঋণ আদায়ের হার মাত্র ৫০ থেকে ৫৬ শতাংশ। যা আগের তুলনায় প্রায় অর্ধেক বা ৫০ থেকে ৩৫ শতাংশ কম। সংকটময় এই সময়ে মাঠ পর্যায়ে তারল্য সংকট তৈরি হয়েছে, যা সামাল দিতে অর্থায়ন নিশ্চিত করা জরুরি। এতদিন কার্যক্রম বন্ধ থাকায় ঋণের কিস্তি তো আদায় হয়নি। বড়, মাঝারী ও ছোট এনজিওগুলোর মধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ছোট এনজিওগুলো। এনজিও খাতের জন্য তিন হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছে সরকার।
নিয়ন্ত্রক সংস্থা মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরি অর্থরিটিরি (এমআএ) অধীনে সারাদেশে ২১ হাজার ৬৬৭টি শাখার মাধ্যমে কাজ করছে সাতশর বেশি মাইক্রো ফাইন্যান্স ইনস্টিটিউট (এমএফআই)। জিডিপিতে মাইক্রো ক্রেডিটের অবদান ১২ দশমিক ৫ শতাংশ। এমএফআই প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে কর্মসংস্থান হয়েছে ২লাখ ৫০ হাজার মানুষের।