বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ০২:১৩ অপরাহ্ন

রূপপুর প্রকল্পের যন্ত্রপাতি রাশিয়া থেকে নির্ধারিত সময়ে আসবে

নিজস্ব প্রতিবেদক
আজকের তারিখঃ বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ০২:১৩ অপরাহ্ন
২৮ জুলাই পিজেএসসি জিও পোডোলস্ক এবং ২৯ জুলাই জেএসসি রাসু কারখানা পরিদর্শন করেন।

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য নির্মাণাধীন বিভিন্ন যন্ত্রপাতি নির্মাণ প্রক্রিয়ার অগ্রগতি দেখার জন্য পিজেএসসি জিও পোডোলস্ক এবং জেএসসি রাসু নামে বৃহত্তর মস্কোর দুটি কারখানা সরেজমিনে পরিদর্শন করেছেন রাশিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত কামরুল আহসান।

বৃহস্পতিবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, রাষ্ট্রদূত গত ২৮ জুলাই পিজেএসসি জিও পোডোলস্ক এবং ২৯ জুলাই জেএসসি রাসু কারখানা পরিদর্শন করেন। পিজেএসসি জিও পোডোলস্ক কারখানা পরিদর্শনের শুরুতে রাষ্ট্রদূত কামরুল আহসানকে প্রতিষ্ঠানটির মহাপরিচালক আনাতোলি এম স্মিরভ নির্মাণ কাজের অগ্রগতি সম্পর্কে অবহিত করেন। বাংলাদেশ সরকারের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত এই প্রকল্পটির কাজ আন্তর্জাতিক মান বজায় রেখে যথাসময়ে সম্পন্ন করার ওপর বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত সমাধিক গুরুত্বারোপ করেন। সভাশেষে কারখানাটির বিভিন্ন বিভাগে রূপপুর প্রকল্পের জন্য নির্মাণাধীন যন্ত্রাংশ পরিদর্শন করেন রাষ্ট্রদূত।

জিও পোডোলস্ক কারখানায় রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্রপাতি তৈরি হচ্ছে। কারখানাটি থেকে ইতিমধ্যে প্রথম ইউনিটের ময়েশ্চার সেপারেটর রিহিটারের চারটি সেট, হাই প্রেসার হিটারের চারটি সেট এবং প্রথম ও দ্বিতীয় ইউনিটের বাবলার ট্যাঙ্ক রূপপুর প্রকল্প এলাকায় সরবরাহ করা হয়েছে। কারখানাটিতে এখন দ্বিতীয় ইউনিটের ময়েশ্চার সেপারেটর রিহিটার, হাই প্রেসার হিটার এবং ইমার্জেন্সি কোর কুলিং সিস্টেম হাইড্রো-একুমুলেটর নির্মাণের কাজ চলছে। যন্ত্রপাতিসমূহের নির্মাণকাজ পরিকল্পনা অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ের পূর্বেই সম্পন্ন এবং প্রকল্প এলাকায় সরবরাহ করা হবে বলে কারখানাটির পক্ষ থেকে নিশ্চয়তা প্রদান করা হয়।

উল্লেখ্য, একটি সেপারেটর এবং দুটি রিহিটার নিয়ে ময়েশ্চার সেপারেটর রিহিটারের একটি সেট গঠিত। বাষ্পকে শুষ্ক করা এবং গতিশক্তি বৃদ্ধির জন্য পুনরায় উত্তপ্ত করার কাজে এটি ব্যবহৃত করা হয়। জিওপোডোলস্ক কারখানাটি শতাধিক বছর ধরে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র, তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র, তেল ও গ্যাস প্রক্রিয়াকরণ শিল্প এবং পারমাণবিক শক্তিচালিত জাহাজের জন্য গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্রাংশ তৈরি করছে। এটি রোসাটম এর কারিগরী বিভাগ এ্যটম-এনার্গোম্যাশ এর অধীনস্থ একটি প্রতিষ্ঠান।

জেএসসি রাসু কারখানা পরিদর্শনের শুরুতে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আন্দ্রেই বুতকোর সঙ্গে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়। করোনা মহামারির মধ্যেও বিশেষ ব্যবস্থাপনায় কারখানার উৎপাদন প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ সচল রাখা হয়েছিল বলে কারখানাটির ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ রাষ্ট্রদূত কামরুল আহসানকে অবহিত করে। বাংলাদেশের প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র রূপপুর প্রকল্পের কাজ যথাসময়ে সফলভাবে সম্পাদনের প্রত্যাশায় দেশের সকলস্তরের মানুষ অধীর আগ্রহে অপেক্ষমান আছে বলে রাষ্ট্রদূত উল্লেখ করেন।

এ সময় কামরুল আহসান রাশিয়ার বিভিন্ন কারখানায় যন্ত্রপাতি উৎপাদন প্রক্রিয়া এবং প্রকল্প এলাকায় নির্মাণ কাজের মধ্যে সমন্বয়ের ওপর বিশেষ গুরুত্বারোপ করেন।

জেএসসি রাসু কারখানায় রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের ইউনিট-১ এর আপারলেভেল কন্ট্রোল সিস্টেম এর বিভিন্ন অংশের একত্রীকরণ এবং পরীক্ষার কাজ চলছে। আগামী সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যে এর সকল কাজ সম্পন্ন হবে এবং কারিগরি মূল্যায়ন শেষে যন্ত্রপাতিসমূহ বাংলাদেশে পাঠানো হবে।

পরিদর্শনকালে কারখানা দুটির মহাপরিচালক এবং প্রকল্পের জেনারেল কন্ট্রাক্টর জেএসসিঅ্যাটমস্ট্রয় এক্সপোর্টের প্রতিনিধি রূপপুর প্রকল্পের সার্বিক ব্যবস্থাপনা এবং অগ্রগতি তদারকির জন্য রাষ্ট্রদূতের মাধ্যমে বাংলাদেশের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী ইয়াফেস ওসমানকে ধন্যবাদ জানায়।

রাষ্ট্রদূত কামরুল আহসান বলেন, ‘রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের একটি স্বপ্নের প্রকল্প ছিল যা তার সুযোগ্যকন্যা বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমানে বাস্তবায়িত হচ্ছে।’

প্রকল্পটি বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ পারমাণবিক বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী ৩০টি দেশের এক বিশেষ সম্মানজনক তালিকায় স্থান করে নেবে বলে আশা প্রকাশ করেন রাষ্ট্রদূত।


এই বিভাগের আরো খবর........
এক ক্লিকে বিভাগের খবর