রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারের প্রধান রাইটারের দায়িত্ব পালন করছেন ট্রেনযাত্রায় ঈশ্বরদীতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যা প্রচেষ্টা মামলার সাজাপ্রাপ্ত আসামি আনোয়ার হোসেন জনি। পাবনার ঈশ্বরদীতে শেখ হাসিনাকে বহনকারী ট্রেনের বগিতে বোমা হামলা ও গুলিবর্ষণ করে হত্যা প্রচেষ্টার ঘটনায় তার ১০ বছরের সশ্রম কারাদন্ড ভোগের সাজা হয়।
জানা যায়, কারাগারের পুরনো বিশ্বস্ত কয়েদিদের গুরুত্বপূর্ণ এই পদটিতে নিয়োজিত করা হয়। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীকে হত্যাচেষ্টা মামলার আসামিকে এ দায়িত্ব প্রদান করায় স্থানীয়ভাবে সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে।
১৯৯৪ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেত্রী ও বর্তমান শেখ হাসিনার খুলনা হতে সৈয়দপুর পর্যন্ত ট্রেন মার্চ কর্মসূচি পালন করছিলেন। শেখ হাসিনাকে বহনকারী ট্রেনটি ঈশ্বরদী স্টেশনে পৌঁছনোর পূর্বে ও পরে বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা তাঁর বগি ল্ক্ষ্য করে উপর্যুপরি বোমা নিক্ষেপ ও গুলিবর্ষণ করে তাঁকে হত্যার চেষ্টা চালায়। ওইদিন রাতে ঈশ্বরদী জিআরপি থানার ওসি নজরুল ইসলাম শতাধিক ব্যক্তির বিরুদ্ধে একটি মামলা করেন। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে মামলাটি পুনরুজ্জীবিত হয়।
দীর্ঘ বিচার প্রক্রিয়া শেষে পাবনার অতিরিক্ত দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. রোস্তুম আলী ২০১৯ সালের ৩ জুলাই স্পর্শকাতর এই মামলার চার্জশিটভুক্ত ৫২ আসামির মধ্যে ৯ জনকে মৃত্যুদন্ড, ২৫ জনকে যাবজ্জীবন ও ১৩ জনকে ১০ বছর করে সশ্রম কারাদন্ডের আদেশ দেন।
আনয়ার হোসেন জনির এই মামলায় ১০ বছর সশ্রম কারাদন্ড হয়। রায় ঘোষণার পরেই জনিসহ দন্ডপ্রাপ্তদের পাবনা জেলা কারাগার থেকে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে স্থানান্তর করা হয়। সম্প্রতি এই জনিকেই রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারের প্রধান রাইটার নিয়োগ করা হয়েছে।
একজন অবসরপ্রাপ্ত কারা কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারের মতো দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম কারাগারের প্রধান রাইটারের দায়িত্ব খুবই গুরুত্বপূর্ণ। দীর্ঘ পরীক্ষিত কয়েদি ছাড়া কাউকে এই পদে দেয়ার নিয়ম নেই। প্রধান রাইটার কারাগারে আসামি ও কয়েদিদের অপরাধের অভ্যন্তরীণ বিচার, তাদের শৃঙ্খলা ও সুযোগ-সুবিধা দেখাশোনা ছাড়াও বাড়তি আয় উপার্জনের বেশ সুযোগ আছে। পাশাপাশি এটি কারাগারের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা নিশ্চিতের জন্য গুরুত্বপূর্ণ পদ।
রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার তারেক কামাল বলেন, কয়েকদিন আগে আনোয়ার হোসেন জনিকে প্রধান রাইটার করা হয়েছে। সে কেস টেবিলে (আসামি-কয়েদিদের বিচার) কর্তৃপক্ষকে সহায়তা করে। তবে বিষয়টি আলাদা করে ভেবে করা হয়নি। সে কয়েদি বলেই এই দায়িত্ব তাকে দেওয়া হয়েছে।