নাটোরের লালপুরে ‘গ্রোবাল পার্টনারশিপ ফর এডুকেশন’ নামে এক বিদেশি সংস্থাকে ‘এনজিও’ পরিচয়ে হতদরিদ্র শতশত গ্রাহককে মোটা অংকের টাকা ঋণ দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়ে পালিয়ে গেছেন একটি প্রতারণা চক্র।
মঙ্গলবার (৭ ফেব্রুয়ারি) রাত ৮ টার দিকে উপজেলার বুধিরামপুর এলাকায় এনজিওটির অফিসে ভুক্তভোগী গ্রাহকরা জড়ো হয়ে এ অভিযোগ করেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত এক সপ্তাহ আগে প্রতরক চক্রটি ‘গ্রোবাল পার্টনারশিপ ফর এডুকেশন’ নামে একটি বিদেশি সংস্থার কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে সরকার অনুমোদিত এনজিও দাবি করে উপজেলার বুধিরামপুর এলাকার মোজের প্রামাণিকের মেয়ে শরিফা খাতুনের বাড়ি ভাড়া নিয়ে এনজিওটির নাটোর জোনাল অফিস গড়ে তোলেন। সেই অফিস থেকে পদ্মার চরাঞ্চল, আশ্রয়ণ প্রকল্প ও তার আশেপাশের এলাকায় প্রতরণার জাল বিস্তার করেন ওই প্রতারক চক্রটি। গত দুই দিনে প্রায় ২ শত হতদরিদ্র মানুষকে ঋণ দেওয়া কথা বলে তাদের থেকে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিয়ে গতকাল দুপুর থেকে লাপাত্তা হয়ে যান। পরে তালাবন্ধ এনজিওর অফিসে ভুক্তভোগী গ্রাহকরা ভীড় করে পাওনা টাকা চেয়ে আন্দোলন করেন।
এসময় কথা হয় রসুলপুর আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দা আলতাফ হোসেনের স্ত্রী জাহানারার সাথে। তিনি জানান, আশ্রয়ণ প্রকল্পে বিদ্যুৎ না থাকায় সৌর বিদ্যুৎ দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে ৯ হাজার টাকা নিয়েছেন। এছাড়া ওই আশ্রয়ণ প্রকল্পের হতদরিদ্র আরো কয়েকজনের থেকে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন চক্রটি।
আরেক ভুক্তভোগী বিলমাড়িয়ার হামিদুল ইসলাম জানান, তার বাড়িতে কেন্দ্র গঠন করে ২ বছর মেয়াদে ২ লাখ টাকা করে ঋণ দেওয়ার কথা বলে প্রত্যেকের থেকে ২০হাজার করে টাকা জামানত নিয়েছেন। পরে অফিসে ঋণ নিতে এসে দেখেন অফিসে তালা দেওয়া এবং ওইসব ভুয়া কর্মকর্তাদের ফোন বন্ধ। এসব প্রতারক চক্রের সদস্যদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।
এবিষয়ে বাড়ির মালিক শরিফা খাতুন জানান, গত এক সপ্তাহ আগে ১২ হাজার টাকায় ওই এনজিওটিকে বাড়িটি ভাড়া দিয়েছিলেন তিনি। দুপুর থেকে রুমে তালা দিয়ে এনজিও টির কর্মকর্তা পালিয়েছে। বিষয়টি পুলিশকে জানানো হয়েছে।
এবিষয়ে কথা বলতে লালপুর উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা আব্দুল মোতালেবকে একাধিকবার মুঠোফোনে ফোন দিলেও তিনি ফোন রিসিভ করেন নি।
লালপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহা. মেনোয়ারুজ্জামান বলেন, অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষ আইনগত ব্যবস্থা হবে।
আর বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন লালপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শামীমা সুলতানা।