উপজেলা পর্যায়ে ৪৯তম স্কুল, মাদরাসা ও কারিগরি শিক্ষা গ্রীস্মকালীন ক্রীড়া ফুটবল টুর্ণামেন্টের ফাইনাল খেলা অনুষ্ঠিত না হলেও বিজয়ী ঘোষণা করা হয়েছে রূপপুর উচ্চ বিদ্যালয়কে। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন প্রতিপক্ষ আলহাজ্ব টেক্সটাইল মিলস উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, অভিভাবকসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা।
জানা যায়, উপজেলার দু’টি ভেন্যুতে মাধ্যমিক পর্যায়ের ৩৬টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ফুটবল খেলায় অংশগ্রহণ করে। ৭ সেপ্টেম্বর থেকে ১০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত অনুষ্ঠিত এ খেলায় রূপপুর উচ্চ বিদ্যালয় ও এটিএম হাই স্কুল ফাইনালে উর্ত্তীণ হয়। শনিবার (১০ সেপ্টেম্বর) বিকাল ৩.৩০ মিনিটে সময় পাকশী বিভাগীয় রেলওয়ে ফুটবল মাঠে ফাইনাল খেলার আয়োজন করা হয়। খেলায় দু’দলের খেলোয়াড়, শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও দর্শকরা উপস্থিত হন। যথাসময়ে অনুষ্ঠানের সভাপতি উপজেলা নির্বাহী অফিসার পি এম ইমরুল কায়েস, প্রধান অতিথি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব নায়েব আলী বিশ্বাস, বিশেষ অতিথি উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম খান, শিক্ষা অফিসার সেলিম আক্তারসহ উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানগণ খেলা দেখতে মাঠে হাজির হন। দু’দলের খেলোয়াড়রা মাঠের মধ্যে উপস্থিত হলে আলহাজ্ব টেক্সটাইল মিলস উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বয়স নিয়ে প্রশ্ন তুলেন প্রতিপক্ষ রূপপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। এই নিয়ে তর্কবিতর্ক শেষে রূপপুর উচ্চ বিদ্যালয়কে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। এসময় আলহাজ্ব টেক্সটাইল মিলস উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা রানারআপের পুরস্কার না নিয়েই মাঠ ছেড়ে চলে যান।
আলহাজ্ব টেক্সটাইল মিলস উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোজাম্মেল হক জানান, খেলার শুরুর আগে হঠাৎ করে খেলোয়াড়কে রেজিষ্ট্রেশন কার্ড দেখতে চায় প্রতিপক্ষ স্কুলের শিক্ষকরা। অথচ এ খেলোয়াড়দের নিয়েই এ টুর্নামেন্টের চারটি খেলায় বিজয়ী হয়ে ফাইনালে উত্তীর্ণ হয়েছি। মাধ্যমিক একাডেমিক সুপারভাইজার নিজে এ খেলার দেখভাল করেছেন। তখন কেউ কোন প্রশ্ন তুলেনি। হঠাৎ খেলার মাঠে গিয়ে রেজিষ্ট্রেশন কার্ড চাইলে কোথা থেকে পাওয়া যাবে। প্রতিপক্ষ দলকে বিজয়ী করতে এটি একটি ষড়যন্ত্র ছিল। এসঙ্গে কারা জড়িত এ বিষয়টি আমি নিজের মুখে বলতে চাচ্ছি না। আমরা বলেছিলাম, যে সকল খেলোয়াড়দের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে তাদের বাদ দিয়ে খেলা হোক তবুও তারা মানেননি।
একাডেমিক সুপার ভাইজার আরিফুল ইসলাম আরিফ জানান, ইতিপূর্বে চারটি খেলায় আলহাজ্ব টেক্সটাইল মিলস উচ্চ বিদ্যালয়ের দলটি অংশগ্রহণ করলেও এদের জন্ম নিবন্ধন বা রেজিষ্ট্রেশনের কাগজপত্র কেউ দেখতে চায়নি। ফাইনাল খেলায় প্রতিপক্ষরা দেখতে চেয়েছে তারা কাগজপত্র আনেনি। সেজন্য টুর্ণামেন্ট কমিটি রূপপুর উচ্চ বিদ্যালয়কে বিজয়ী ঘোষণা করেছে।
উপজেলা শিক্ষা অফিসার সেলিম আক্তার জানান, খেলার বিধান অনুযায়ী খেলায় অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের জন্মনিবন্ধন/রেজিষ্ট্রেশন কার্ড/প্রবেশপত্র মূল সার্টিফিকেট খেলার মাঠে আনার কথা ছিল। খেলোয়াড়দের বয়স অভিযোগ উঠার পর আলহাজ্ব টেক্সটাইল মিলস উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের দ্রত জন্মনিবন্ধন নিয়ে আসার জন্য বলা হলেও তারা আনেনি। সেজন্য খেলার বিধি অনুযায়ী প্রতিপক্ষ দলকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। আলহাজ্ব টেক্সটাইল মিলস উচ্চ বিদ্যালয়ের এসব খেলোয়াড়রা কিভাবে এ টুর্ণামেন্টের চারটি খেলায় অংশগ্রহণ করেছিল জানতে চাইলে তিনি বলেন, যারা এ চারটি খেলা পরিচালনার দায়িত্বে ছিল তাদের চিঠি দিয়ে এ বিষয়ে কৈফিয়ৎ চাওয়া হবে।