বর্তমানে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ও মৃত্যু কমলেও দেশে আগামী এক থেকে দেড় মাসের মধ্যে করোনার আরেকটি ঢেউ আসতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। তাই সংক্রমণ কমায় স্বাস্থ্যবিধি পালনে শিথিলতার কোনো অবকাশ নেই, বরং স্বাস্থ্যবিধি পালনে সবার আরও সচেতন হওয়া প্রয়োজন বলেও মত দিচ্ছেন স্বাস্থ্য সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
শনিবার (১৬ এপ্রিল) দেশে টানা পাঁচ দিন করোনা আক্রান্ত হয়ে কেউ মারা যায়নি। এর আগে সোমবার (১১ এপ্রিল) ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনা আক্রান্ত হয়ে একজনের মৃত্যু হয়। এ পর্যন্ত দেশে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মোট মৃত্যু হয়েছে ২৯ হাজার ১২৪ জনের।
এদিন নতুন করে শনাক্ত হয়েছেন ৫১ জন। সব মিলিয়ে আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৯ লাখ ৫২ হাজার ২৭৫ জন। এ পর্যন্ত মোট সুস্থ হয়েছেন ১৮ লাখ ৯০ হাজার ৫১৬ জন।
শুক্রবার (১৫ এপ্রিল) ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষায় শনাক্তের হার ছিল শূন্য দশমিক ৬৪ শতাংশ। যা বেড়ে শনিবার দিগুণ হয়েছে। এদিন গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষায় শনাক্তের হার এক দশমিক ২৮ শতাংশ।
সংক্রমণ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনা ভাইরাস বিভিন্ন দেশে কমে গিয়ে কিছুদিন পর আবার বাড়ে। সাধারণত তিন মাস পর পর করোনার একেকটা ঢেউ আসে। পাশাপাশি করোনার নতুন কোনো ভ্যারিয়েন্টের কারণে সংক্রমণ দ্রুত বাড়তে পারে।
বর্তমানে দেশে করোনা ভাইরাস পরিস্থিতি প্রসঙ্গে আইইডিসিআরের উপদেষ্টা ডা. মুশতাক হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, দেশে এই মুহূর্তে সংক্রমণ সব থেকে কম রয়েছে। তবে সংক্রমণ শেষ হয়ে গিয়েছে এমনটা ভাবার কোনো কারণ নেই। আমরা দেখেছি, পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে সংক্রমণ কমে গিয়েছিল, সেখানে আবার সংক্রমণ বাড়ছে। সাধারণত সব দেশেই তিন মাস পর পর করোনার ঢেউ দেখা যায়। আমাদের দেশেও আগামী এক থেকে দেড় মাসের মধ্যে করোনার আরেকটি ঢেউ আসার আশঙ্কা রয়েছে। আবার করোনার নতুন কোনো ভ্যারিয়েন্টের (ধরণ) কারণেও সংক্রমণ দ্রুত বাড়তে পারে। নতুন ভ্যারিয়েন্ট না এলেও সংক্রমণ ঊর্ধ্বগতির প্রবণতা রয়েছে।
বর্তমানে করোনা নিয়ন্ত্রণে থাকলেও ভবিষ্যতে আমরা কীভাবে আরও বেশি সুরক্ষিত থাকতে পারি জানতে চাইলে তিনি আরও বলেন, আমাদের অবশ্যই মাস্ক পরতে হবে এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। জনসমাবেশ যতটা এড়িয়ে চলা। যেখানে লোকজনের জমায়েত হয়, সেখানে বাতাস চলাচলের ব্যবস্থা করা। কোনো কিছু স্পর্শ করলে হাত সাবান দিয়ে ধুয়ে ফেলা কিংবা স্যানিটাইজার ব্যবহার করতে হবে।
আইইডিসিআরের উপদেষ্টা বলেন, মাস্ক পরা এবং হাত ধোয়া আমাদের শুধুই করোনা থেকে নয়, অন্যান্য রোগ থেকেও সুরক্ষা দেবে। এখন যেমন ডায়রিয়া হচ্ছে অনেকের। সাবান দিয়ে নিয়মিত হাত ধুলে ডায়রিয়া থেকে অনেক ক্ষেত্রেই সুরক্ষা পাওয়া যায়।
তিনি আরও বলেন, আমরা মহামারি থেকে স্বাভাবিক জীবনে অবশ্যই ফিরে যাবো। স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যেতে অন্যান্য রোগ বালাই থেকে আমাদের মুক্ত থাকতে হবে। না হলে স্বাভাবিক জীবনে ফেরার মূল উদ্দেশ্য ব্যাহত হবে।