নাটোরের লালপুর উপজেলায় আগুনে পুড়ে জাহিদ (১১) নামের এক প্রতিবন্ধী শিশুর মৃত্যু হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৯ নভেম্বর) দুপুরে উপজেলার পানসিপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।সংসারের আয় বাড়াতে মালা তৈরীর ফুল সংগ্রহ করতে যান ভিখারিনী মা জায়মন। ঘরে রেখে যান প্রতিবন্ধি একমাত্র জাহিদকে (১১)। কিন্তু কাজ শেষে বাড়ি ফিরে সে দেখতে পান আগুনে ঝলসানো একমাত্র ছেলের মরদেহ। ভস্মিভূত একমাত্র টিনের চালা ভাঙ্গা ঘরটি।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নাটোরের লালপুর উপজেলার পানসীপাড়া গ্রামের মৃত শওকত আলির প্রতিবন্ধি স্ত্রী জায়মন তার প্রতিবন্ধি ছেলে জাহিদকে নিয়ে ভিক্ষাবৃত্তি করে সংসার চালাতেন। ভিক্ষাবৃত্তির পাশাপাশি সংসারের আয় বাড়াতে ফুলের মালা বানানোর কাজ করতেন।
বৃহস্পতিবার (১৯ নভেম্বর ) সকালে ছেলে জাহিদকে ঘরে ঘুমন্ত অবস্থায় রেখে কাজে বাইরে যান জায়মন। ঘুম থেকে জেগে জাহিদ দিয়াশলাই জালালে ঘরে আগুন লেগে যায়। প্রতিবেশীরা বুঝে ওঠার আগেই নিজের লাগানো আগুনে পুড়ে অঙ্গার হয়ে যায়। সেই সাথে পুড়ে যায় তাদের একমাত্র শোবার ঘরটি ।
ছায়া প্রতিবন্ধি ও অটিস্টিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সিমানুর রহমান জানান, সে ওই বিদ্যালয়ের প্রাক-প্রাথমিক শ্রেণির ছাত্র ছিল।
স্থানীয়রা আরো জানান, নিহত শিশু প্রতিবন্ধী হওয়ায় ছেলেকে ঘরে সিকল দিয়ে আটকে রেখে তার মা ফুল তুলতে বের হন। পরে প্রতিবন্ধী জাহিদের থেকে বা অন্যকোন ভাবে ঘরে আগুন লাগে, তা থেকে তার শরীরে আগুনে লেগে ঘটনাস্থলেই পুড়ে মারা যায় সে।
লালপুর ফায়ার সার্ভিসের ইনচার্জ রুহুল আমিন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, আগুন লাগার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছার আগে প্রতিবন্ধী শিশুর মৃত্যু হয়। পরে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা গিয়ে লাশ উদ্ধার করে।
জাহিদ হোসেনের শোকার্ত মাকে শান্তনা ও সহযোগিতায় দুড়দুড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুল হান্নান, প্রাকীর্তি ফাউন্ডেশন, লালপুর পাবলিক লাইব্রেরির নের্তৃবৃন্দ, ছায়া প্রতিবন্ধী ও অটিস্টিক বিদ্যালয়সহ বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান এগিয়ে আসে।