বুধবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ০৪:৪৭ পূর্বাহ্ন
শিরোনামঃ
শিরোনামঃ
চৈত্র সংক্রান্তি আজ পহেলা বৈশাখ বরণে প্রস্তুত ঈশ্বরদী উপজেলা প্রশাসন ঈদ এলেও তাদের স্বপ্ন বাড়ি যায় না ঈশ্বরদীতে ঈদ বাজারে শেষ মুহূর্তে বিক্রি বেড়েছে প্রসাধনী সামগ্রীর ঈশ্বরদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার পিতা : চির বিদায় ঈশ্বরদীতে সর্বজনীন পেনশন স্কিম বাস্তবায়নে বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষের সাথে মতবিনিময় সভা ঈশ্বরদীতে মুড়ির ফ্যাক্টরি সহ তিন প্রতিষ্ঠানে অভিযান,জরিমানা ৮০ হাজার টাকা ঈশ্বরদীতে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ক্রীড়া দিবস পালিত ঈশ্বরদীতে ধানক্ষেত থেকে মেছো বাঘ উদ্ধার রুপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের অগ্রগতি পরিদর্শনে প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানী বিষয়ক উপদেষ্টা

আধুনিক যুগেও টিকে আছে কাঠের পিঁড়ির সেলুন|#LikeShare

বার্তা কক্ষঃ
আজকের তারিখঃ বুধবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ০৪:৪৭ পূর্বাহ্ন
আধুনিক যুগেও কাঠের পিঁড়ির সেলুন #likeShare

আধুনিক সভ্যতার ক্রম বিবর্তনের ফলে দৈনন্দিন জীবনের সকল ক্ষেত্রেই এসেছে পরিবর্তন। লেগেছে আধুনিকতার ছোঁয়া। গড়ে ওঠেছে বিভিন্ন ধরনের আধুনিক সেলুন। এসব সেলুনে চলছে আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার।

এই আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার ও দাপটের মাঝেও পাবনা বেড়া উপজেলার বাধেঁরহাঁট ও সাথিয়া উপজেলার কাশিনাথপুর হাটবারে এখনও সমানতালে টিকে আছে আবহমান বাংলার সেই চিরচেনা পিঁড়িতে বসা সেলুন।

তবে পুঁজি কম থাকায় ভাগ্য বদলায় না বলে এসকল সেলুনের কারিগরদের সাথে কথা বলে জানা গেছে। তবে হাটে বসে সেলুন বসা কয়েকজন প্রবীণ নাপিতদের বিভিন্ন হাঁটে বাজারে সেলুনের দোকান আছে তাদের সাথে কথা বলে জানা গেছে।

বেড়া ও সাঁথিয়া উপজেলায় ছোটখাটো বাজারসহ প্রায় ৫০টি হাট-বাজার রয়েছে। এসব হাট-বাজারের পরিত্যক্ত খোলা জায়গায়, রাস্তার পাশে, ফুটপাতে ছাতা ও পলিথিনের  নিচে বসে বংশ পরম্পরায় পিঁড়িতে বসা সেলুনের মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহ করে আসছেন নাপিতরা।

বিভিন্ন গ্রাম থেকে দরিদ্র লোকেরা হাটবারে চুল কাটতে এসব সেলুনে আসেন তবে তাদের মধ্যে সবাই বৃদ্ধ ও প্রবীণ। এসব সেলুনে চুল কাটতে ২০টাকা ও শেভ করতে ১০টাকা লাগে। সারাদিন কাজ শেষে একজন নাপিত পায় দু’শ থেকে দু’শ ৫০টাকা। এই টাকাই চলে তাদের জীবন। এই টাকাই চলে ছেলে-মেয়েদের লেখাপড়াসহ যাবতীয় খরচ। বছর শেষে আয় বলতে কিছুই থাকে না তাদের। ফলে একটি আধুনিক সেলুন তৈরি করতে পারছেন না তারা।

বেড়া উপজেলার বাঁধেরহাঁট রবিবার হাঁটবারে সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, রাস্তার পাশে ফুটপাতে গাছের নিচে পিঁড়িতে বসে সামনে কাঠের টুল নিয়ে ৮ থেকে ১০ জন নাপিত লোকজনের চুলদাড়ি কাটছে। তাদের পাশেই কাঠের তৈরি একটি পিঁড়ির উপর ছোট গামছায় চুল কাটার ও শেভ করার সরঞ্জাম ও যন্ত্রপাতি রাখা আছে।

ঢালারচর গ্রামের রহিম শেখ (৬০) একজন ব্যক্তিকে পিঁড়িতে বসিয়ে হাঁটুর কাছে মাথা নিয়ে চুল কাটছেন জয়দেব চন্দ্র শিল নামের এক নাপিত। জগন্নাথ বিশ্বাস নামের এক নাপিত একজন বৃদ্ধের দাড়ি শেভ করছেন। আর কয়েকজন লোক অপেক্ষায় বসে আছেন। এমন দৃশ্য চোঁখে পড়ে সাথিয়া উপজেলার কাশিনাথপুর হাটে প্রতি বৃহস্পতিবার ও রবিবার, এছাড়াও সাঁথিয়ার গৌরীগ্রাম হাটে, সাঁথিয়া বাজারে, বেড়া পুরান বাজারে, করমজা চতুর হাটে।

চুল দাড়ি কাটতে আসা রহিম শেখ এর সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, আমি ৩০ বছরেরও বেশি হবে এখান থেকে চুল দাড়ি কাটাই আধুনিক সেলুনে শুধু শেভ করতে লাগে ৩০-৫০ টাকা আর চুল দাড়ি সহ ৮০ থেকে ১০০। এই সেলুনে শেভ করতে লাগে ১০টাকা চুল কাটতে লাগে ২০ টাহা। আমরা বুড়া মানুষ দামি তাই যাই না ।

দুর্গাপুর গ্রামের চুল কাটাতে আসা ময়ছের বলেন, চেয়ারে বসে চুল কাটলে লাগে ৫০টাকা। আর এখানে লাগে ২০টাকা। আমরা গরীব মানুষ। তাই এখানে ২০টাকা দিয়ে চুল কাটতে আসি। বাঁধের হাটে সপ্তাহে শনিবার মঙ্গলবার বৃহস্প্রতিবার হাঁট বসে প্রতি হাঁট বারে এখানে নাপিতরা বসে। তবে এখানে যারা চুল দাড়ি কাটায় তাদের সবাই গরিব ও বৃদ্ধ মানুষ বলে তিনি জানান।

জয়দেব চন্দ্র শীল বলেন, আমি পিঁড়িতে বসিয়ে প্রায় ৫০ বছর ধরে এ কাজ করছি। প্রথম জীবনে চুল কাটছি চার পয়সা ও দাড়ি কাটছি দুই পয়সা দিয়ে। সে সময় নাপিতদের যা আয় হতো তা দিয়েই সংসার ভালোভাবে চলতো। কিন্তু বর্তমানে ২০টাকায় চুল ও ১০টাকায় দাড়ি কেটেও সারাদিনে যে টাকা পাই, তা দিয়ে সংসার চালাতে কষ্ট হয়। আর করোনার সময় সংসার চালাতে খুব কষ্ট হয়েছে।

বসন্তপুর গ্রামের নাপিত সলেমান  বলেন, আমি ৫৫ বছর ধরে এ কাজ করছি। বর্তমানে যুগের সাথে তাল মিলিয়ে সব কিছুর পরিবর্তন হয়ে গেছে। চুল ও দাড়ি কাটার সরঞ্জাম ও যন্ত্রপাতির পরিবর্তন হয়েছে। আধুনিক সেলুনগুলোতে এখন আর শান দেয়া ক্ষুর নেই। এর বদলে এসেছে ব্লেড। এসেছে শেভিং ক্রিম, ফোম, উন্নতমানের লোশন। যখন আমরা এ কাজ শুরু করেছিলাম তখন এসব ছিল কল্পনার বাইরে। প্রতিদিন যা উপার্জন করি তা দিয়ে কোনোরকমে সংসার চলে যায়। আধুনিক সেলুন দেওয়ার মতো এতো টাকা হাতে নেই।


এই বিভাগের আরো খবর........
এক ক্লিকে বিভাগের খবর
error: কপি করার অনুমতি নেই !
error: কপি করার অনুমতি নেই !