মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪, ০২:৩৩ অপরাহ্ন
শিরোনামঃ
শিরোনামঃ
ঈশ্বরদীতে জাকির সুপার মার্কেট ব্যবসায়ীদের কার্যনির্বাহী কমিটি গঠন লালপুরে আশ্রয়ণ প্রকল্পের এক শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগ মূল্য স্থিতিশীল রাখতে ঈশ্বরদীতে উপজেলা প্রশাসনের বাজার মনিটরিং বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনে ঈশ্বরদী উপজেলা প্রশাসনের ইফতার মাহফিল ঈশ্বরদীতে বেশি দামে তরমুজ বিক্রি, ৬ ব্যবসায়িকে জরিমানা ঈশ্বরদী উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবস উদযাপন ঈশ্বরদীতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন ও শিশু দিবস পালিত ঈশ্বরদীতে উপজেলা প্রশাসনের বাজার মনিটরিং ঈশ্বরদীতে আ.লীগ নেতার মৃত্যুতে সাংসদ গালিবুর রহমান শরিফ এর শোক ঈশ্বরদীতে আওয়ামীলীগ নেতা নায়েক কাদের এর মৃত্যু

বকেয়া বেতন-ভাতার দাবিতে পাবনা চিনি কলের শ্রমিকদের বিক্ষোভ

আব্দুল বাতেন
আজকের তারিখঃ মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪, ০২:৩৩ অপরাহ্ন

প্রায় ৭ মাস ধরে বেতন-ভাতা পাচ্ছেন না পাবনা চিনিকলের ৬৭৯ জন শ্রমিক-কর্মচারীরা। ফলে বাধ্য হয়ে তারা আজ ২৬ আগষ্ঠ বুধবার সকাল ১০টায় মিল গেটে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে।

এসময় শত শত শ্রমিকরা বেতনের দাবিতে এক দফা দাবি তুলে স্লোগান দিতে থাকে। ২ঘন্টা ব্যাপী শান্তিপূর্ণ বিােভ সমাবেশ শেষে পথসভা অনুষ্ঠিত হয়। পথ সভায় বক্তব্য দেন-পাবনা চিনি কলের সিবিএ সভাপতি মোঃ সাজেদুল ইসলাম শাহীন,সাধারন সম্পাদক মোঃ উজ্জল হোসেন সরদার, দাশুড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বকুল সরদার,সিবিএর সাবেক সভাপতি মোঃ ইব্রাহিম হোসেন,আরিফ হোসেন,সাংগঠনিক সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম,সাবেক সাধারন সম্পাদক বাবু প্রমুখ। বক্তব্য শেষে তারা আগামী সাত দিনের মধ্যে মিলকর্তৃপ এ সমস্যার সমাধান না করলে বৃহত্তর আন্দোলনের ডাক দেওয়ার হুমকি দেন।

বর্তমানে চিনিকলটির শ্রমিক-কর্মচারীদের বকেয়া বেতন-ভাতার পরিমাণ প্রায় ৭ কোটি ৪৬ লাখ টাকা। এতে পরিবার-পরিজন ও স্বজন নিয়ে মানবেতর জীবন কাটাচ্ছেন তারা। জানা গেছে,নানা অব্যবস্থাপনার কারণে সরকারি এ চিনিকলটি কয়েক বছর ধরে ধারাবাহিকভাবে লোকসান করে আসছে। এখন পর্যন্ত কলটির লোকসানের পরিমাণ ৬শ কোটি টাকার বেশি। সঙ্গে রয়েছে শ্রমিক-কর্মচারীদের বকেয়া বেতন-ভাতা। চিনিকল কর্তৃপক্ষ মিল চালাতে বছর বছর সরকারি ব্যাংক থেকে বিপুল পরিমাণ ঋণও করে রেখেছে। এই ঋণের ওপর বছরে সুদ দিতে হচ্ছে প্রায় ৭০/৮০ কোটি টাকার মতো। ফলে চিনিকলের আর্থিক ব্যবস্থাপনা ভেঙে পড়ার উপক্রম হয়েছে। গত মৌসুমে পাবনা চিনিকলে উৎপাদিত ২ হাজার ১০ টন চিনি বিক্রি হয়েছে। ক্ষর্তমানে ৪ হাজার টন চিনি এখনও অবিক্রিত অবস্থায় মিলের গুদামে পড়ে রয়েছে। ৬০ টাকা কেজি দরে যার আনুমানিক মুল্য প্রায় ২৪ কোটি টাকা। পাবনা চিনি কলের শ্রমিক-কর্মচারীরা জানান,গত ঈদুল ফিতরের আগে তারা বকেয়াসহ সব বেতন-ভাতার সঙ্গে বোনাসও আশা করেছিলেন। কিন্তু তাদেরকে বকেয়া বেতন তো দূরের কথা চলতি বেতনও দেয়নি কর্তৃপ। গত ফেব্র“য়ারি মাস থেকে শুরু চলতি মাস পর্যন্ত তাদের বেতন-ভাতা বকেয়া রয়ে গেছে। কর্তৃপ বলছে,চিনি বিক্রি হলে এবং সামনে নভেম্বরে মিল চালু হলে তখন সব বকেয়া বেতন দেয়া হবে। শ্রমিক-কর্মচারীদের প্রশ্ন তারা এই কয়েক মাস কীভাবে সংসার চালাবেন।

পাবনা চিনিকলের শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মোঃ সাজেদুল ইসলাম শাহীন ও সাধারন সম্পাদক মোঃ উজ্জ্বল হোসেন সরদার বলেন,করোনাকালীন দুর্যোগের কারণে আখ চাষী থেকে মিলের শ্রমিক-কর্মচারী সবাই সংকটে আছেন। বিশ্ব মানবতার মাতা প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা প্রত্যেকটা জায়গায় প্রনোদনা দিলেও চিনিমিল শ্রমিকদের কাছে তার একটি টাক্ওা এসে পোঁছায়নি। চিনি বিক্রি না হওয়ায় আখ চাষীরাও মিলের কাছে অনেক টাকা পাবেন। এর আগে বেতন-ভাতা পরিশোধের জন্য ফেব্র“য়ারি মাসে শ্রমিক-কর্মচারীরা আন্দোলন করেছেন। মাঝে মধ্যে ছোট খাট কর্মসূচিও পালন করছেন। চাষীরাও আখের দাম পেতে মিলের গেটে ধরনা দিয়েছেন। কিন্তু সমস্যার সমাধান হয়নি।

শ্রমিক ইউনিয়নের এই নেতারা আরও বলেন,সরকারি সব প্রতিষ্ঠানে শ্রমিক-কর্মচারীরা ২০১৫ সালের মজুরি কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী বাড়তি বেতন-ভাতা পেয়েছেন। কিন্তু পাবনা চিনিকলে সেই সুপারিশ এখনও বাস্তবায়ন হয়নি। ফলে কর্তৃপ আর্থিক সংকটের কথা বলে তাদেরকে সর্বশেষ মজুরি কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী বেতন-ভাতা দিচ্ছে না। এ বাবদ পাবনা কলের শ্রমিক-কর্মচারীদের আরও ৩ কোটি ৭০ লাখ টাকা পাওনা আছে।
জানা গেছে, পাবনা চিনিকলে নিয়মিত শ্রমিক ৩৭৯ জন,মৌসুমি ২৪৯ জন,কর্মকর্তা-কর্মচারী ৩৪জন এবং এর বাইরে ৩৫জন চুক্তিভিত্তিক শ্রমিক রয়েছেন। মিলের কাছে তাদেরও পাওনার পরিমাণ প্রায় ৪০ লাখ টাকা। এই বকেয়া বেতন-ভাতা না পেয়ে চুক্তিভিত্তিক শ্রমিকরাও পরিবার নিয়ে চরম সংকটময় পরিস্থিতি পার করছেন। চুক্তিভিত্তিক শ্রমিকরা কিছু বেতন-ভাতা পরিশোধের জন্য মিলের কর্মকর্তাদের ধারে ধারে ঘুরছেন।

এ প্রসঙ্গে পাবনা চিনিকলের মহাব্যবস্থাপক (জিএম) প্রশাসন সাইফ উদ্দীন আহমদ বলেন, শ্রমিক-কর্মচারীদের বেতন বকেয়া রয়েছে ঠিকই কিন্তু আমাদের উৎপাদিত চিনির একটি বিরাট অংশও অবিক্রিত অবস্থায় গুদামে পড়ে আছে। যার মূল্য ২৪ কোটি টাকা এ চিনি বিক্রি করতে পারলে তাদের বকেয়া বেতন-ভাতা সমস্ত পরিশোধ করা সম্ভব হবে। এখন প্রশ্ন উঠেছে তাহলে চিনি বিক্রি না হলে কি শ্রমিকরা বেতন পাবেনা ? বেতন ভাতা না পেলে তারা চলবে কেমন করে ,অফিসে আসবে কেমন করে ? এ প্রশ্নের সদুত্তর জিএম দিতে পারেন নাই।


এই বিভাগের আরো খবর........
এক ক্লিকে বিভাগের খবর
error: কপি করার অনুমতি নেই !
error: কপি করার অনুমতি নেই !